সাইবার জগতের অপরাধীরা, সাধারনত মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য আত্মসাৎ করার জন্য সামাজিক প্রকৌশলকে  প্রাথমিকভাবে কাজে লাগায় । অধিকাংশ সাইবার হানার এটাই হল সেই লৌকিক মাধ্যম যা নাকি অনেক সময় আমাদের ধারণার অতীত। সামাজিক প্রকৌশল হল ভুল বা অসত্য তথ্য  পরিবেশনের এক প্রবেশপথ। এটি হল সেই মাধ্যম যা মানুষকে বোঝানোর এক সচেতন ও সুদক্ষ কৌশল যা সেই ব্যাক্তিটি প্রতারিত হচ্ছে সেটি বোঝার আগেই তার ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হয়।

এখন মহিলারা অনেক বেশী টেকনোলজি সংক্রান্ত বসু ব্যবহার করেন কিন্তু তাতে কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হ্য় সেটা জানেন না। একজন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার সেই সুযোগ নিয়েই প্রবেশ করেন একটি মহিলার সম্বন্ধে ব্যাক্তিগত তথ্য জানতে।

কি ভাবে একটি সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার মহিলাদের আক্রমন করেন    

জনবহুল স্থানে

ক্যাফে, সিনেমা হল, পাব বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করা যায়। আপনি হয়তো খুব স্বাভাবিক ভাবেই কারুকে একটা তথ্য দেবেন, এবং সেটা অন্য কেউ শুনে নিয়ে তার অপব্যবহার করতে পারে।

জনবহুল স্থানে অসতর্ক ভাবে কোন কথা বলবেন না।

গুজব

আপনার কফি খাবার সময়ে তাচ্ছিল্যের সাথে বলা কথা আপনার সম্বন্ধে গোপন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়ে দিতে পারে। আপনি জানেননা যে আপনার সম্মুখের ব্যক্তি সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার কিনা। সেই কথোপকথন যদি কোন সাইবার স্থলে হয়ে থাকে, সেখান থেকে সাইবার বিপদ সৃষ্টি হতে পারে।

গুজব করা ভালো নয়, এর মাধ্যমে আপনি কোন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে আপনার বন্ধু বা শত্রুর সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে দিতে পারেন। তাই অচেনা লোকের সাথে গল্প গুজবে মাতবেন না।   

আত্মগরিমা সংকীর্তন বা আত্মবিশ্বাস

নিজের সম্বন্ধে প্রশংসা অনেক সময়েই বিপদ ডেকে আনে, বিশেষ করে সেটা যদি অজানা ব্যাক্তির সম্মুখে করা হয়। আপনি যদি কোন নেটওয়ার্কের কর্ণধার হন, তবে মাথায় রাখবেন যে কোন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার আপনার ব্যবসা সম্বন্ধে জানতে আপনাকে কথার মাধ্যমে ওসকাতেই পারে।

আপনার ব্যবসা, সংস্থান বা নিজস্ব কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অজানা ব্যাক্তির সামনে বলার আগে সতর্ক হয়ে যান।

অনলাইন

কোন নেটওয়ার্কের কর্ণধার সেজে আমানাকে ইমেইল বা তদ্রূপ কিছু দিয়ে, আপনার থেকে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার কোন গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য জেনে নিতে পারেন, যেমন পাসওয়ার্ড বা সেই জাতীয় কিছ তথ্য, যাতে সেই সুরক্ষিত ক্ষেত্রে অনধিকার প্রবেশ করতে পারে সে।

নিজের পাসওয়ার্ড কখনো কারুর সাথে বাটবেন না!

ভিসিং

ফোনের  ব্যবহার করে অনেক সময়েই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়াররা আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। ভিশিং মানে ভয়েস বা শব্দের আর ফিশিং এর মিলিত শব্দ।

আপনার কোন অর্থনীতি সম্পর্কিত তিথ্য ফোনের মাধ্যমে কারুকে দেবেন না। যদি কোন কম্পানির ফোন হয়, তবে দুদুবার দেখে নিন, সেটা কম্পানির ফোন কিনা।

ফিশিং

আপনার গোপন আর গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিগত তথা ছদ্মবেশে হাতিয়ে নেওয়া কে ফিশিং বলে। ইমেইল, পপ-আপ উইন্ডো ইত্যাদির মাধ্যমে আপনাকে আকর্ষণীয় ছাড় বা পুরস্কার দেবার নাম করে সেই তথ্য হাতানো হয়। সাধারনত কোন নাম করা ওয়েবসাইটের নকল করে সেই কাজ করা হয়ে থাকে।

যদি আপনার সন্দেহ হয় যে আপনার কাছে ফিশিং ইমেইল এসেছে, তাহলে সেই মেলে থাকা কোন লিঙ্কে আপনি ক্লিক করবেন না।

জুয়া বা বেটিং

এটি সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর এমন এক পদ্ধতি যেটা আপনার লোভ বা জানার কৌতূহলকে ব্যবহার করা হয়। আপনার সামনে অপরাধী এমন দেখাবে যেন খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনার সামনে রেখে দিয়েছে, আর সেটা ভুলে নিয়ে যায় নি, যেমন USB, পেন ড্রাইভ বা CD/DVD ROM  হতে পারে। আর সে নেপথ্যে দাঁড়িয়ে আপনার সেই জন্ত্রতি ব্যবহার করার অপেক্ষা করবে সে ব্যাক্তি।

শেই সমস্ত যন্ত্র যা অন্যে ফেলে গেছে, তাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না।

প্ররোচনা

আপনাকে অহেতুক ভাবে প্ররোচিত করা হতে পারে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য দিতে। সোশ্যাল ইঞ্জনিয়ার আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য যেমন আমানার স্কুল বা সংস্থান সম্বন্ধে জানতে আপনার আইডি কার্ড চাইতে পারে, প্রচনার মাধ্যমে।

সন্দেহ করতে শুরু করুন কোন আকর্ষণীয় পুরষ্কারে আর সেটা পেতে নিজের গোপন তথ্য দেবেন না।

ডাম্পস্টারের ঝোঁক

আপনি ডাস্টবিনে যে সমস্ত কাগজ ফেলে দিচ্ছেন, তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাসিল করে নেওয়া একটি অনবদ্য উপায়।

 বাড়ি থেকে বা অফিস থেকে যে সমস্ত কাগজ বর্জন করছেন, দেখে নিন যে তাতে কোন গুরুত্বপূর্ণ বা গোপন তথ্য নেই।

ধোঁকাবাজি

কোন বেঠিক কে ঠিক মানানোকে ধোঁকা বলে। এটি সাধারনত কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তির উপর প্রয়োগ করা হয়, এবং তার অর্থনীতি সংক্রান্ত তথ্য হাসিল করে নেওয়া হয়।

অজানা জায়গা থেকে ইমেইল এলে তাকে দেখবেন না, আর তার মধ্যে যদি কোন অর্থনীতি বিষয়ক প্রশ্ন থাকে, তাতে উত্তর দেবেন না।

অজুহাত

অজুহাত হলো একটি ব্যাক্তির সামনে এমন একটি পরিস্থিতি প্রস্তুত করা, যাতে করে সেই ব্যাক্তি বাধ্য হয় নিজের বিষয়ে কিছু গোপন তথ্য দিতে। সামান্য মিথ্যার থেকে এটা অনেকাংশেই বড় একটি অপরাধ।

সতর্ক থাকুন। অজানা ব্যাক্তি আপনার সামনে এমন এক বিকত পরস্থিতি তৈরি করে দিতে পারেন, যেখানে আপনার

গোপন তথ্য দিতে আপনাকে বাধ্য করা হবে। সেই সমস্ত অবস্থা থেকে সময় থাকতে সরে যান।

Page Rating (Votes : 2)
Your rating: